ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল (E-Cap)

আসসালামু আলাইকুম, রূপচর্চায় আমাদের অনেকেই ওষুধের নাম বলতে ভিটামিন ই ক্যাপ (E-Cap) চিনে থাকে। ভিটামিন ই ক্যাপসুলগুলো ব্যবহার করে কি আসলেই আমাদের রূপচর্চায় উপকার আসে? ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর ব্যবহার সম্পর্কে কোন কোন বিষয়ে আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে এবং কিভাবে ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করতে হবে সে সম্পর্কে আমাদের আজকের উপস্থাপন। আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল (E-Cap) সম্পর্কে বিস্তারিত। 

রূপচর্চায় ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার নিয়ে আমরা কমবেশি অনেকেই অবগত। রূপচর্চার কাজে ভিটামিন ই ক্যাপসুল বা ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল সবুজ রঙের ছোট আকারের স্বচ্ছ ক্যাপসুলগুলো। সাধারণত সকল ফার্মেসিতেই পাওয়া যায় এই ভিটামিন ই ক্যাপসুল। আমাদের চুল পড়া বা তকজনিত পরামর্শ দিয়ে থাকেন ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়ার জন্য। শুধু ডাক্তার নয় অনেক সময় বড় আপু, চাচি মামি খালার কথা শুনে বা দেখে ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেতে শুরু করি। 

প্রেসক্রিপশন ছাড়া ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়া আমাদের জন্য কতটা সমস্যা তৈরি করতে পারে এ সম্পর্কে আমরা হয়তো অনেকেই অবগত নই। তবে অনেকেই জানতে চান ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল (E-Cap) কি কি কাজ করে থাকে, সেই সম্পর্কে। ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল সম্পর্কে ধারণা অবশ্যই দিব। কিন্তু তার আগে কিছু সাধারণ বিষয় জেনে নেওয়া যাক। মনে করুন আপনি সকাল বিকেল রূপচর্চায় ভিটামিন (E-Cap) খেলেই 2 অথবা 3 দিনে মুসলিম উজ্জ্বল ত্বক এবং মাথা ভর্তি চুল দেখতে পাবেন! এমন ধারণা যদি করে থাকেন তাহলে এটি সম্পূর্ণ ভুল। কারন প্রেসক্রিপশন ছাড়া ভিটামিন ক্যাপসুল খাওয়ার অভ্যাস খুব অল্প সময়ে আপনার প্রেসারের জটিলতা, অতিরিক্ত ওজন বাড়ানো, হরমোনাল ইম্ব্যালান্স সহ আরো অনেক ধরনের জটিল সমস্যায় তৈরি করতে পারে। আপনি হয়তো ভাবছেন চুল পড়া সমস্যায় ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেয়ে আপনি ডাক্তারের অনেকগুলো খরচ বাঁচিয়ে ফেলেছেন। নিজের কাছের মানুষের জীবনে ঘটে যাওয়া করুন ঘটনাগুলো থেকে বলছি এমন কাজ করলে আপনাকে অচেনা পস্তাতে হবে। 

সকলকে সাবধান করে দিয়ে আজকে উপস্থাপন ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল (E-Cap) সম্পর্কে আলোচনা করতে যাচ্ছি। কারণ অনেকেই প্রেসক্রিপশন ছাড়া অনেক ধরনের ওষুধ খেয়ে নিজের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেন। অনেকে এমন একটা লেভেলের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেন যেন ডাক্তারের এত বছরে অভিজ্ঞতা ও পড়াশোনা করার কোন মূল্যই নেই। টপাটপ ট্যাবলেট খেয়ে নিজের জীবনকে কষ্টের ঝুঁকিপূর্ণ পথ ছাড়াও কিভাবে আপনি অতি সহজলভ্য ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর সহযোগিতা নিতে পারেন এবং সুন্দর সুন্দর ইত্যাদি পেতে পারেন সে বিষয়ে জানব।

ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল কিভাবে ব্যবহার করবেন?

নিচে দেওয়া প্রতিটি টিপস এর জন্য ক্যাপসুল ফুটো করে ফেললে যে তেলটি পাওয়া যায় সেটা আপনার ব্যবহার করা লাগবে। যেহেতু একটা ক্যাপসুল ফুটো করলে প্রায় আধা চা চামচ তেল পাওয়া যায় আর ভিটামিন ই ক্যাপসুল খুবই ভারী হয়ে থাকে। সুতরাং আপনাকে আপনার ত্বকের ধরন বুঝে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর তেল ব্যবহার করতে হবে। অতি সহজলভ্য এই ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর তেল আপনাকে লাগজারিয়াস বিউটি ট্রিটমেন্ট রেজাল্ট এনে দেবে। 

১) ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল স্কিন সিরাম

২) ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল হেয়ার সিরাম

৩) ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল নাইট ক্রিম

৪) কোনই এবং হাটুর কালো দাগ দূর করতে

৫) ঠোঁট মসৃণ ও গোলাপি করতে

৬) চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে

৭) অনেক পুরনো কাটা দাগ অথবা ব্রণের দাগ দূর করতে

ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল স্কিন সিরা

দি বডি শপ এর একটি ভিটামিন ই ফেসিয়াল সিরাম রয়েছে। গ্যারান্টি দিয়ে বলা যেতে পারে ভিটামিন ই ক্যাপসুল যদি আপনার ত্বকে ব্যবহার করেন তবে বডি শপের সিরাম এর মতই আপনি রেজাল্ট উপহার পাবেন। ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারে আপনাকে অল্প টাকা গুনতে হবে। ড্রাই আর নরমাল স্কিনের অধিকারীরা ভিটামিন ই তেল ত্বকে ফোঁটা ফোঁটা লাগিয়ে হালকা হাতে মেসেজ করে বসিয়ে দিতে হবে। এবং তৈলাক্ত ত্বকের যারা পাঠক রয়েছেন, আপনাদের জন্য তেলটা খুবই ভারী হবে। তাই আপনাকে মাত্র এক ফোঁটা তেল প্রথমে দুই হাতে নিয়ে ঘুরতে হবে, এরপর হাত দুটো মুখে পাঁচ সেকেন্ড চেপে ধরতে হবে। হয়ে গেল আপনার সিরাম লাগানো। এভাবে আপনি যদি ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করেন তাহলে আপনার জন্য অন্য কোন নাইট ক্রিম বা সিরাপ ব্যবহারের প্রয়োজন পড়বে না। এবং এই টিপস এ সবচেয়ে বেশি উপকার পাবেন একটু বয়স্ক যারা রয়েছেন। কারন আপনার ত্বকের ফাইন লাইন দূর করতে হলে ভিটামিন ই ক্যাপসুল খুবই ভালো উপকারিতা দেবেন। 

ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল হেয়ার সিরাম

আমাদের মধ্যে অনেকেরই চুল পড়া বন্ধ করার জন্য এবং রিবনডেড বা কালারড চুলের যত্নে ভিটামিন ই খুব ভালো উপকারিতা এনে দেবে। ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল থেকে বেশি উপকার পেতে হলে আপনাকে দুই থেকে তিনটি ক্যাপসুল ভেঙে ভারী তেলটা একটি পাত্রে নিয়ে স্ক্যাল্প আর চুলে লাগিয়ে নিতে হবে। সারারাত রেখে পরের দিন ধুয়ে ফেলতে হবে। যদি আপনার মনে হয়ে থাকে এই ট্রিটমেন্টটি আপনার জন্য বেশি ভারী হয়ে যাচ্ছে তবে শ্যাম্পু করলে যাচ্ছে না তাহলে এক টেবিল চামচ নারকেল তেলের সঙ্গে একটা ক্যাপসুল ভেঙে ব্যবহার করতে হবে। খুব সহজে শ্যাম্পু করে নিতে পারবেন।

🟨 জেনে নিন লেবু পানি খাওয়ার উপকারিতা

ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল নাইট ক্রিম

প্রথম টিপস টি কাজে লাগাতে অনেকেই ভয় পাবেন। কারন ফেসিয়াল অয়েল জিনিসটি এখনো এদেশে খুব একটা জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি। তাদের জন্য বিশেষ করে এই টিপস টি। আপনার পছন্দের কোন নাইট ক্রিম কিংবা হালকা বেবি ক্রিম নিয়ে নিন। এবার একটি কৌটাতে এক থেকে দুইটি ক্যাপসুল এর তেল ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। এখন আপনার কাজ এই ক্রিমটি রেগুলার ব্যবহার করা। এর থেকে আপনি একটা ভিটামিন ই এর গুণটি পাবেন। একইভাবে আপনার পছন্দের বডি লোশন এর সাথে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভেঙ্গে মিশিয়ে আপনি ব্যবহার করতে পারবেন আপনার ত্বকে। আশা করি ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল (E-Cap) এর টিপসটি আপনার জন্য সহজ হবে। 

কোনই এবং হাটুর কালো দাগ দূর করতে

অনেক পুরনো দিনের স্কিন ড্যামেজের দাগ দূর করার জন্য ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর তুলনা হয় না। আপনার কুনই আর হাঁটুতে যদি এমন কোন দাগ থেকে থাকে তাহলে সেটি আপনি রেগুলার একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর তেল বা মুখে ব্যবহার করার পর অতিরিক্ত যে তেলটুকু বাকি থাকে সেটি দিয়ে আপনার কুনই বা হাটুর কালো দাগ দূর করতে পারবেন। কুনই ও হাঁটুর কালো দাগ দূর করতে ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল দুই থেকে তিন সপ্তাহ ব্যবহার করলে আপনি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারবেন।

ঠোঁট মসৃণ ও গোলাপি করতে

মুখ হাত-পা সহ শরীরের বিভিন্ন অংশের ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর তেল ব্যবহার করার পর যতটুকু তেল অবশিষ্ট থাকে তার একটি ফোটা আপনার ঠোঁটে লাগিয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন। কালো, ফাটা ঠোঁটের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন নিমিষেই। আপনার পছন্দের লিপ বাম বা ভেসলিনের সাথে ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভেঙে মিশিয়ে সেটাও রেগুলার ভাবে ব্যবহার করার পরামর্শ থাকবে। 

চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে

 আমাদের মত অনেকেই চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার জন্য খাঁটি বাদাম তেল ব্যবহার করে থাকেন। এর সাথে যদি আপনি ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল (E-Cap) তেল মিশিয়ে নিয়ে থাকেন তবে খুব কম সময়ের মধ্যে আপনি আশানুরূপ ভালো ফলাফল পাবেন। খাঁটি বাদাম তেলের সাথে একটি বা দুইটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল তেল ভেঙে মিশিয়ে রেগুলার ব্যবহার করুন।

অনেক পুরনো কাটা দাগ অথবা ব্রণের দাগ দূর করতে

যদি আপনার ত্বকে অনেক পুরনো কোন কাটা দাগ, ব্রণের দাগ থেকে থাকে তাহলে রেগুলার এই দাগের জন্য এক দুই ফোটা করে ভিটামিন (E-Cap) এর তেল লাগিয়ে রাখুন। ধীরে ধীরে আপনি দেখতে পাবেন, কাটা দাগ বা ব্রণের দাগ দূর হতে চলেছে। এ ধরনের দাগ হালকা করতে হলে ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর তেল অনেক উপকারী। 

উপসংহার

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় ছিল ত্বকের যত্নে ভিটামিনই ক্যাপসুল সম্পর্কে। রূপচর্চার জন্য আমরা অনেকেই ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেয়ে থাকি এবং এর তেল ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু ভিটামিন ই ক্যাপসুল রূপচর্চার কাজে সঠিক নিয়মে ব্যবহার না করলে কোন ফলাফলই পাবেন না। উল্টে পোহাতে হবে জটিলতায়। ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া হুটহাট করে ভিটামিন ই ক্যাপসুল বা E-Cap খাওয়া থেকে বিরত থাকুন এবং কিভাবে সতর্কতা অবলম্বন করে ত্বকের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল (E-Cap) ব্যবহার করবেন সে সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি সম্পন্ন ভালোভাবে পড়ুন। আরো নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে বেশি বেশি আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button